কালিগঞ্জে ১১ বাইসাইকেল ও ১ মোটরসাইকেল উদ্ধার, আটক ৩

বিশেষ প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে পৃথক অভিযান চালিয়ে ১১ টি চোরাই বাইসাইকেল ও ১টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। চুরির সাথে জড়িত এক ব্যক্তিকে এবং চুরিকৃত মালমাল ক্রয়ের অভিযোগে আটক করা হয়েছে দুই ব্যবসায়ীকে।
এসময় পালিয়ে গেছে আরও তিন ভাংড়ি ব্যবসায়ী। আটকরা হলেন, উপজেলার মৌতলা ইউনিয়নের মৃত কেনা চৌকিদারের ছেলে রাজিবুল ইসলাম, পরমানানন্দকাটি গ্রামের মৃত হানিফের ছেলে ভাংড়ি ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম ও শ্যামনগর উপজেলার ভাংড়ি ব্যবসায়ী হাফিজুর ইসলাম।
গত সোমবার দুপুর ১২ টার দিকে পৃথক অভিযান চালিয়ে মৌতলার গ্রামপুলিশ, দফাদার ও জনতা তাদেরকে আটক এবং চোরাই বাইসাইকেল ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করেন। পরবর্তীতে আটক ব্যক্তিদের থানায় সোপর্দ করেন মৌতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
মৌতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফেরদাউস মোড়ল জানান, চারদিন আগে মৌতলার লক্ষীনাথপুর গ্রামে ওয়াজ মাহফিল থেকে একটি ভ্যান চুরি হয়ে যায়। ঘটনার তিনদিন পর চুরি হওয়া ভ্যানটি ভাংড়ি ব্যবসায়ী রুহুল আমিনের দোকান থেকে উদ্ধার করা হয়। রাজিবুল নামে এক ব্যক্তির নিকট থেকে দুই হাজার টাকার বিনিময়ে ওই ভ্যানটি বন্ধক রেখেছে বলে চেয়ারম্যানকে জানান ব্যবসায়ী রুহুল আমিন। গত সোমবার দুপুরে চেয়ারম্যান ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে রাজিবুলকে ভ্যানের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে সে রুহুল আমিনের কাছে দুই হাজার টাকায় চুরি করা ভ্যানটি বিক্রি করেছে বলে জানায়। এর ১সপ্তাহ আগে দুইটি চোরাই বাইসাইকেল রুহুল আমিন তার কাছ থেকে কিনেছে বলে সে স্বীকার করে। জিজ্ঞাসাবাদে চোর রাজিবুল আরও জানায় সে গত ৬ মাসে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ৪৬ টি বাইসাইকেল ও ২টি ভ্যান চুরি করেছে।
চুরিকৃত বাইসাইকেলের মধ্যে ২০ টি কিনেছে হাফিজুর ও তার ছেলে বাবু। ১৫ টি কিনেছে আলম, ৮ টি কিনেছে সিরাজ। আর রুহুল আমিন কিনেছে ৩ টি বাইসাইকেল। চোর রাজিবুল এর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী চেয়ারম্যানের নির্দেশে দফাদার, গ্রাম পুলিশ ও স্থানীয়রা চোরাই সাইকেল উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করে মৌতলা বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত সিরাজের দোকান থেকে ৬ টি, বাসস্ট্যান্ড মসজিদে মার্কেটে অবস্থিত হাফিজুরের দোকান থেকে দুইটি ও বাড়ি থেকে দুইটি বাইসাইকেল উদ্ধার করে।
এছাড়া শ্যামনগর উপজেলার মাজাটে অবস্থিত রুহুল আমিনের গোডাউন থেকে উদ্ধার করা হয় ১মোটর সাইকেল ও ১বাইসাইকেল। অভিযানের খবর পেয়ে দোকান বন্ধ করে দ্রুত পালিয়ে যায় অসাধু ব্যবসায়ী আলম। পরে চোর রাজিবুল ও ভাংড়ি ব্যবসায়ী সিরাজ ও হাফিজুরকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
ঘটনায় জড়িত অসাধু ব্যবসায়ী রুহুল আমিন, আলম ও বাবু এলাকায় না থাকায় তাদের আটক করা সম্ভব হয়নি জানিয়ে মৌতলা ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, মৌতলার অধিকাংশ ভাংড়ি ব্যবসায়ী চোরদের কাছ থেকে স্বল্পমূল্যে চোরাই মালামাল কেনাকাটা করেন। এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
কালিগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ হারুনার রশিদ মৃধা বলেন, চুরির অভিযোগে রাজিবুলকে এবং চোরাই মাল কেনার অপরাধে সিরাজুল ও হাফিজুরের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। চোরের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ১১ টি সাইকেল ও ১টি মোটর সাইকেল উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে চোর স্বীকারোক্তি দিলেও ব্যবসায়ী রুহুল আমিন ও আলমের বিরুদ্ধে মামলা হয়নি বলে নিশ্চিত করেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
What's Your Reaction?






