ডিম বিক্রেতা চবি শিক্ষার্থী টুম্পার পাশে ডিসি, বাবাকে দেওয়া হলো অটোভ্যান

Jan 30, 2025 - 19:16
 0  3
ডিম বিক্রেতা চবি শিক্ষার্থী টুম্পার পাশে ডিসি, বাবাকে দেওয়া হলো অটোভ্যান

নাটোর প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মেধাবী ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস টুম্পা (২১) ছুটিতে এসে গ্রামের বাজারে বিক্রি করছে ডিম। এরকম সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ার পর মানবিক সাহায্যের হাত বাড়ালেন নাটোরের জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন।

বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি টুম্পার বাবা ভ্যানচালক আব্দুর রাহিমকে দিলেন ব্যাটারী চালিত একটি নতুন অটোভ্যান। নাটোরের বড়াইগ্রামের পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা প্রশাসক আনুষ্ঠানিকভাবে টুম্পার বাবার হাতে তুলে দেন নতুন অটোভ্যানের চাবি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল ইসলাম, চবি’র শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস টুম্পা, বিভিন্ন সাংবাদিকবৃন্দ ও অন্যান্য সুধীজন। উল্লেখ্য, মাত্র ১৫ দিনের ছুটি পাওয়ার পর প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূর থেকে প্রায় ১০ ঘন্টা বাসে জার্নি করে নিজ গ্রাম নাটোরের বড়াইগ্রামের নগর ইউনিয়নের দোগাছি গ্রামে আসেন টুম্পা। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম পিতা পেশায় একজন ভ্যান চালক। বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যেতে বাস ভাড়া ও লেখাপড়া এবং নিজের কিছু খরচের যোগান পেতে টুম্পা স্থানীয় মেরিগাছা বাজারে খোলা আকাশের নীচে বেলা ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার অবধি বিক্রি করে আসছে সিদ্ধ ডিম। এ সংবাদ ফেসবুক সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ার পর তা ভাইরাল হয়ে যায়। পরে জেলা প্রশাসক উদ্যোগী হয়ে টুম্পার বাবার হাতে একটি নতুন অটোভ্যান তুলে দেন।

ভ্যান পেয়ে টুম্পার বাবা আব্দুর রাহিম জানান, আমি অনেক খুশী হয়েছি। আমি আগে নষ্ট ও পুরানো একটি ভ্যান চালাতাম। যা আয় করতাম তার অর্ধেকই খরচ হতো মেরামত করতে গিয়ে। ডিসি স্যার আমাকে নতুন ভ্যান দিয়েছেন। এই ভ্যান দিয়ে আমি ভালো আয় করতে পারবো এবং তা দিয়ে সাধ্যমতো আমার দুই মেয়ের পড়াশোনার জন্য খরচ করতে পারবো। শিক্ষার্থী টুম্পা জানান, সাংবাদিকদের মাধ্যমে আমার অসহায়ত্বের খবরটি ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই সাহায্য করার কথা জানিয়েছেন। কিন্তু আমি সাহায্য নিতে চাই না। আমি পরিশ্রম করে সৎ পথে যতটুকু পেরেছি আয় করেছি। অবশ্যই এটা আমার বা আমার পরিবারের জন্য যথেষ্ঠ নয়। আমরা গরীব মানুষ। এক্ষেত্রে সরকারি অনুদান পেলে বা প্রাতিষ্ঠানিক কোন অনুদান পেলে একজন দরিদ্র নাগরিক হিসেবে তা গ্রহণ করবো। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, টুম্পা অনেক মেধাবী ছাত্রী। তার লেখাপড়া অব্যাহত রাখার জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা অব্যাহত থাকবে। জেলা প্রশাসক আসমা শাহিন জানান, টুম্পা যে ভাবে দরিদ্রতা দূর করার প্রচেষ্ঠায় আছে তা খুবই একটি প্রশংসনীয় বিষয়। লেখাপড়া শেষ করে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় সকল ধরণের সহযোগিতা দিতে জেলা প্রশাসন তার পাশে আছে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow