সৈয়দপুর পৌরসভার কর্মচারীদের কর্মবিরতি অব্যাহত, হামলা ঘটনায় থানায় মামলা

Aug 19, 2025 - 23:01
Aug 23, 2025 - 09:10
 0  7
সৈয়দপুর পৌরসভার কর্মচারীদের কর্মবিরতি অব্যাহত, হামলা ঘটনায় থানায় মামলা

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি : নীলফামারীর সৈয়দপুরে পৌরসভার জায়গা দখলে বাঁধা দেওয়ায় দুই কর্মচারীর ওপর হামলা ও বেধড়ক মারপিটের ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সৈয়দপুর পৌরসভার সহকারী কর আদায়কারী ও পৌর সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুজন শাহ্ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৩০/৩৫ জনকে আসামি করে ওই মামলাটি করেন। মামলা নম্বর: ২৪, তারিখ-১৯/০৮/২০২৫ইং।

মামলায় বলা হয়, গত রবিবার (১৭ আগস্ট) রাত আনুমানিক নয়টার দিকে কতিপয় কুচক্রি ব্যক্তিবর্গ সৈয়দপুর পৌর এলাকার গোয়াল পাড়া কলাহাটি এলাকায় মর্ডান পাবলিক টয়লেট ব্লকের কিছু জায়গা অবৈধভাবে নিজ দখলে নিয়ে নির্মাণ কাজ করছিল। রাতেই দখলের এ খবর পেয়ে সৈয়দপুর পৌরসভার সহকারী কর আদায়কারী ও পৌর সার্ভিস এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুজন শাহ্ এবং বিল ক্লার্ক (পানি শাখা) মো. মোকছেদ আলী সেখানে যান। তারা সেখানে উপস্থিত হয়ে মামলায় উল্লিখিত আসামীসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৩০/৩৫জনকে পৌরসভার সম্পত্তি নিজ দখলে নিয়ে নির্মাণ কাজ করতে দেখেন। এ সময় নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে বললে দখলবাজরা পৌরসভার ওই দুই কর্মচারীর ওপর পরিকল্পিতভাবে অতর্কিত আক্রমণ করে। এ সময় শুভ নামের এক ব্যক্তি পৌর কর্মচারী সুজন শাহ’র গলা টিপে তাঁর প্রাণনাশের অপচেষ্টা চালালে তাঁকে রক্ষা করতে পৌর কর্মচারী মোকছেদ আলী ও পথচারি তৌহিদুল ইসলাম ভান্ডারি এগিয়ে আসেন। কিন্তু দখলবাজরা তাদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পৌর দুই কর্মচারীর ওপর চড়াও হয়ে তাদের এলোপাতাড়ি বেধড়ক মারপিট করতে থাকে। এতে পৌর কর্মচারী সুজন শাহ গুরুতর আহত হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এ সময় হামলাকারীরা পথচারি তৌহিদুল ইসলামের পকেটে থাকা ত্রিশ হাজার টাকা বের করে নেয়। পরবর্তীতে আশেপাশের লোকজন হামলা ও মারপিটের শিকার দুই পৌর কর্মচারী সুজন শাহ ও মোকছেদ আলী ও তহিদুল ইসলামকে উদ্ধার করে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করায়। বর্তমানে তহিদুল চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরলেও ওই দুই কর্মচারী সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় হামলা ও মারপিটের শিকার পৌর কর্মচারী সুজন শাহ গতকাল মঙ্গলবার বাদী হয়ে ১২জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৩০/৩৫ জনের বিরুদ্ধে সৈয়দপুর থানায় একটি মামলা করেছেন। তবে এ রির্পোট পাঠনো পর্যন্ত মামলার কোন আসামিকে থানা পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। সৈয়দপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নয়ন কুমার পৌর কর্মচারীদের ওপর হামলা ও মারপিটের ঘটনায় মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মামলার আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এদিকে, পৌরসভার কর্মচারীদের ওপর অতর্কিত হামলায় মারপিটে আহত করার প্রতিবাদে ও জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে সৈয়দপুর পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতি অব্যাহত রয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দ্বিতীয় দিনের কর্মবিরতি পালন করা হয়। কর্মসূচিতে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পৌর কার্যালয়ের সামনে অবস্থান দিয়ে ওই কর্মবিরতি পালন করেন। ফলে পৌরসভার সকল প্রকার সেবামূলক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় মানুষজন সেবা নিতে এসে না ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছে। তারা তাদের সেবা না পেয়ে চরম দূর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। গত দুই দিন যাবৎ পৌরসভার সেবা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় প্রতিটি পাড়া মহল্লায় ও শহরের প্রধান প্রধান সড়কে ময়লা আবর্জনা স্তুপ দেখা দেয়। এতে পথচারী তথা পৌর নাগরিকরা চরম বিপাকে পড়েছেন। এছাড়াও পৌর কর্মকর্তা- কর্মচারীদের কর্মবিরতি চলায় অনেক এলাকার গত সোমবার রাতে বেলায় স্ট্রীট লাইটগুলো বন্ধ করে রাখা হয়। ফলে পৌরসভার পুরো আবাসিক এলাকাগুলো অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে এবং ভূতড়ে পরিবেশ বিরাজ করে। গত দুইদিন থেকে নাগরিক সেবা ব্যাহত হওয়ায় পৌরসভার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পৌরবাসীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এদিকে সর্বশেষ পাওয়া খবরে জানা গেছে, পৌরসভার কর্মকর্তা - কর্মচারীদের চলা অব্যাহত কর্মবিরতির কারনে পৌর এলাকায় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। পৌরসভায় সেবা নিতে গিয়ে ফিরে আসছেন লোকজন। নাগরিক সেবা না পেয়ে পৌরবাসী দূর্ভোগে পড়েছেন। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে পৌরসভার কর্মকর্তা - কর্মচারীদের চলা কর্মবিরতি প্রত্যাহারে কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে বৈঠকে বসেছেন সৈয়দপুরের বিএনপি - জামায়াত নেতৃবৃন্দসহ সুধিজন। 

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৪ টায় সৈয়দপুর পৌর কমিউনিটি সেন্টারে ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক মো. নুর - ই -আলম সিদ্দিকী। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বৈঠক চলছিল।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow