কালিগঞ্জের রতনপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার হাত-পা ভেঙে ফেলার হুমকি!

বিশেষ প্রতিনিধি: ভূয়া দলিল ও মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে জমির নামজারি করতে ব্যর্থ হয়ে রতনপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার হাত-পা ভেঙে ফেলা ও চাকুরি খাওয়ার হুমকি দিয়েছে বহু অপকর্মের হোতা দলিল লেখক জিএম শফিকুল ইসলাম ওরফে জাল শফি (৬২)।
এ ঘটনার প্রতিকারের জন্য কালিগঞ্জ উপজেলা সহকারী (ভূমি) এর নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী রতনপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দুলাবালা গ্রামের মৃত বদর উদ্দীন গাজীর ছেলে আব্দুর রশিদ গাজী ১৩১নং দুলাবালা মৌজার ৬৫৩নং খতিয়ানে ১৩৪ দাগের সম্পত্তি নামজারির জন্য ৬৮৪৭৮৭৮নং আবেদন করেন যার কেস নং ৬৮০৩/২০২৪-২৫। এছাড়া ১২৬নং গোয়ালপোতা মৌজার ১১৭ ও ১৩৯নং খতিয়ানের রেকর্ডীয় মলিক মৃত এবাদ আলীর ওয়ারেশগণ তাদের ওয়ারেশসূত্রে প্রাপ্ত নামজারি জমাখারিজের জন্য ৬৮৫৭৯৫৮নং আবেদন করেন যার কেস নং-৬৮৮৭/২০২৪-২৫। ওই দুটি নামজারি কেসের তদবিরকারক হিসেবে ডিড রাইটার জিএম শফিকুল ইসলাম ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা রেজাউল ইসলামকে রিপোর্ট দেয়ার জন্য বারবার তাগাদা দিতে থাকেন। লিখিত অভিযোগে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম আরও জানান, আবেদনকারী আব্দুর রশিদ গাজী নামজারির আবেদনে গত ১৯/০২/২৪ তারিখের ৫২৪৮নং দানপত্র দলিল জমা দিয়েছেন যা যাচাই করে নন-রেজিস্ট্রিকৃত দলিল বলে জানা গেছে। তাছাড়া ওই খতিয়ান ও দাগের সম্পত্তি নিয়ে বিজ্ঞ আদালতে মামলা চলমান আছে। দ্বিতীয় আবেদনে মৃত এবাদ আলীর ওয়ারেশগণ ওয়ারেশ সূত্রে প্রাপ্ত দেখিয়ে নামজারির জন্য গত ২২/০৭/২০২০ তারিখে ১১৭/২০২০ নং স্মারকে ১১নং রতনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সচিবের সীলবিহীন ওয়ারেশকায়েম সনদ জমা দিয়েছেন। তাছাড়া নামজারির আবেদনের সাথে ৩ মাসের মধ্যে প্রাপ্ত ওয়ারেশকায়েম সনদ জমা দেয়ার নিয়ম থাকলেও আবেদনকারী প্রায় ৫বছর পূর্বে নেয়া চেয়ারম্যান ও সচিবের সীলবিহীন ওয়ারেশকায়েম সনদ জমা দিয়েছেন। এসব বিষয় উল্লেখ করে রতনপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম উপজেলা সহকারী কমিশন (ভূমি) এর কার্যালয়ে রিপোর্ট জমা দেন। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১২-০৩-২০২৫ খ্রিস্টাব্দ তারিখে দুপুর ২টা ১০ মিনিটে দাঙ্গাবাজ ও আইন অমান্যকারী ডিড রাইটার উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের পারুলগাছা গ্রামের মরহুম সৈয়দ আলীর ছেলে জিএম শফিকুল ইসলাম তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে (০১৭১১-০১৬১২৫) নামজারির কেস দুটির বিষয়ে জানতে চান। কাগজপত্র ও সরেজমিন যাচাইয়ের পর ত্রুটি থাকায় সে অনুযায়ী আবেদনের রিপোর্ট উপজেলা ভূমি অফিসে জমা দেয়া হয়েছে জানানোর পর ডিড রাইটার জিএম শফিকুল ইসলাম ক্ষিপ্ত হয়ে নানারকম অশ্লীল গালিগালাজ করতে থাকে। এসময় চাকুরি খাওয়ার হুমকি দিয়ে বলে, তোকে দেখে নেবো এবং কালিগঞ্জ চৌরাস্তা মোড়ে পোষা বাহিনী দিয়ে তোর হাত-পা ভেঙে দিবো। এঘটনায় ভীত সন্ত্রস্ত ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম।
অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য বুধবার উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে ডিড রাইটার জিএম শফিকুল ইসলামের সেরেস্তায় একাধিকবার গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
কালিগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অমিত কুমার বিশ্বাস লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
What's Your Reaction?






