আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমি দখল ও স্থাপনা নির্মাণ অব্যাহত!

Jan 5, 2025 - 16:27
Jan 7, 2025 - 15:31
 0  8
আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমি দখল ও স্থাপনা নির্মাণ অব্যাহত!
আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে স্থাপনা নির্মাণ

নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি : নীলফামারীর সৈয়দপুরে একটি মাদরাসার নামে ব্যক্তিমালিকানার জমি দখল করার চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে প্রভাবশালী একটি মহল। এ নিয়ে আদালতে মামলা ও নিষেধাজ্ঞা থাকলেও চক্রটি বিরোধীয় জমিতে স্থাপনা নির্মাণ অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ মিলেছে। মাদরাসার নামে ধর্মীয় অনুভুতি কাজে লাগিয়ে ব্যক্তিগত ভাবে লাভবান হতে ক্ষমতার দাপটে এই অবৈধ কাজ করছেন চক্রটি। এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিক থানায় অভিযোগ করায় উল্টো তাকে হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে। জমির মালিক ঢাকাস্থ মিরপুরের ব্যবসায়ী আব্দুল্লাহ আল মামুন গণমাধ্যমকে জানান, ২০১৬ সালের বায়নানামা মুলে ২০২২ সালে মুল মালিক শেখ হাবিবুর রহমানের কাছ থেকে সৈয়দপুর শহরের কয়া গোলাহাট ইসলামবাগ এলাকায় কয়া মৌজার ১০২ শতক জমি ক্রয় করি। এর মধ্যে ১০ শতক জমি আমি মাদরাসা প্রতিষ্ঠায় দান করার মনস্থ করি। এমনকি প্রয়োজনে মাদরাসার আশে পাশে আমার ক্রয়কৃত সব জমি মাদরাসার নামে দান করারও সিদ্ধান্ত নেই। একইসাথে ওই মাদরাসায় আব্দুর রউফ ও সাহেদ আলী নামে দুজন ১০ শতক করে জমি দান করেন। এ অবস্থায় তাদের ২০ শতকসহ মোট ৩০ শতক জমিতে কাদেরিয়া তাহেরিয়া সাবেরিয়া সুন্নীয়া নামে একটি মাদরাসা স্থাপন করা হয়। তিনি বলেন, সেখানে ১ম থেকে ৫ শ্রেনী পর্যন্ত পাঠদানে ৬ কক্ষের একটি টিনসেট ঘরও তৈরি করে দেই। মাদরাসার কার্যক্রম চালু হলে কিছুদিন পর আয়ব্যয় সংক্রান্ত গড়মিলের বিষয়ে প্রতিবাদ করায় তারা আমাকে অবৈধভাবে মাদরাসার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেয়। এদিকে মাদরাসার পাশেই শিশুদের জন্য থিম পার্ক তৈরীর সময় আমার ২৮ শতক জমি তাদের সীমানার মধ্যে পড়ে ও সীমানার বাইরে আমার ক্রয়কৃত জমির সাথে তাদের সমপরিমান জমি থাকায় এবং জমিগুলো একই মালিকের হওয়ায় উভয় পক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতা হয়। এনিয়ে লিখিত চুক্তিনামা অনুযায়ী পরস্পরের মধ্যে জমি অদল বদল করা হয়। তখন থেকে শিশুদের বিনোদন পার্ক ও মাদরাসা নিজ নিজ জমিতে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। অভিযোগ রয়েছে সাহেদ আলী মাদরাসা পরিচালনা কমিটিতে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়ে নিজের ইচ্ছেমত প্রতিষ্ঠানটি কাজ করে যাচ্ছেন। এমনকি থিম পাক ও মাদরাসার মাঝামাঝি থাকা শেখ হাবিবুর রহমানের একটি ঘর হেফজ্খানার ছাত্রদের থাকার জন্য নিলেও পরে দখলে নেয়। এর প্রতিবাদ করায় সেই ঘরে মাইক টানিয়ে মসজিদ বানানোর ঘোষণা দিয়ে ধর্ম অবমাননার নাটক সাজিয়েছে। এতে বাধ্য হয়ে জমির মালিক আদালতে একটি মামলা করেন। পরে বিজ্ঞ আদালত মামলার সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত উক্তঘরসহ সকল বিত্তে কোন প্রকার স্থাপনা নির্মাণসহ নতুন করে কোন কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন। কিন্তু সম্প্রতি সাহেদ আলী গং আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাদরাসার পাশে আবু বাশার মোহাম্মদ এর জমিতে নতুন করে স্থাপনা নির্মাণ শুরু করেছে। এতে বাধা দেয়ায় বিবাদী পক্ষের লোকজন তার ( জমি মালিক) নিযুক্ত প্রতিনিধি জাফর আলী রমজানিকে গালিগালাজ করাসহ প্রাণনাশের হুমকি ধামকিও দিয়েছেন। ফলে জাফর আলী রমজানী গত ১ জানুয়ারী সৈয়দপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এর প্রেক্ষিতে থানায় উভয়পক্ষের মধ্যে সমঝোতার জন্য গত ২ জানুয়ারী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু সেখানে সাহেদ আলী গংরা মাদরাসা কমিটির সাথে জমির অদলবদল সংক্রান্ত তৎকালীন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে উপস্থিত করতে না পারায় বৈঠকটি অমিমাংসিত থাকে । আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সাহেদ আলী গংরা মূলতঃ মাদরাসার নামে জমি দখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। তিন বলেন, আব্দুর রউফ ও সাহেদ আলীর যেটুকু জমি রয়েছে সেটুকুসহ আমার ১০ শতক জমিই শুধু মাদরাসার। আশেপাশে আর কোন জমি না থাকলেও তারা জোরপূর্বক আমার জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণে বেআইনী কাজ করেছেন। জাফর আলী রমজানী বলেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, আব্দুর রউফ ও সাহেদ আলী ১০ শতক করে জমি দান করে এই মাদরাসাটি গড়ে তোলেন। এমনকি প্রতিষ্ঠানের ভবনও আব্দুল্লাহ আল মামুন নির্মাণ করে দেন। এখন আবার আবু বাশার মোহাম্মদ এর জমিতে নতুন করে স্থাপনা নির্মাণ করে জমি দখলের অপচেষ্টা করছেন প্রতিপক্ষ সাহেদ আলীরা। অথচ এই জমিতে মামলা চলমান। মামলা নং ৮৫/২০২৪। এব্যাপারে মাদরাসাটির সভাপতি মো. আব্দুর রউফ এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, বর্তমানে যে জমিতে নতুন করে স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী তা মাদরাসার নয়। এমতাবস্থায় এই নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ অবৈধভাবে করা হচ্ছে। আমি গত মাসিক মিটিংয়ে এবিষয়ে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু সাহেদ আলী , নাসিমরা তা মানছেন না। মাদরাসার সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলীর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আব্দুর রউফ সভাপতি হলেও তিনি ব্যাপারটি বোঝেননি। তাই এমন মন্তব্য করেছেন। যে জমিতে ইটের গাথুনি দেয়া হচ্ছে তা মাদরাসার কি না? জানতে চাইলে তিনি সে বিষয়ে সঠিক কোন উত্তর না দিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow